| |
               

মূল পাতা রাজনীতি অন্যান্য হামলা-মামলা করে জনগণের কণ্ঠ স্তব্ধ করা যায় না : সুব্রত চৌধুরী


হামলা-মামলা করে জনগণের কণ্ঠ স্তব্ধ করা যায় না : সুব্রত চৌধুরী


রহমত নিউজ ডেস্ক     31 October, 2023     03:01 PM    


গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেছেন, সরকার বিপথগামী হয়ে হামলা-মামলা করে জনগণের উপর আক্রমণ করে ঝাঁপিয়ে পড়ে ভেবেছে আমাদের স্তব্ধ করা যাবে কিন্তু ইতিহাস বলে জনগণের কণ্ঠ স্তব্ধ করা যায় না। মিছিল মিটিং অব্যাহত থাকবে যতদিন পর্যন্ত এই সরকার পদত্যাগ না করে, যতদিন পর্যন্ত হাসিনা সরকারকে বিদায় করতে না পারবো ততদিন পর্যন্ত আমরা রাজপথে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

আজ (৩১ অক্টোবর) মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় দেশে চলমান বিচারহীনতা, অপশাসন, সীমাহীন দুর্নীতি, অনাচার, অর্থ পাচার ও সিন্ডিকেটবাজীর ফলে দ্রব্যমূল্যের অব্যাহত ঊর্ধ্বগতিতে বিপর্যস্ত জনগণের জীবন জীবিকা রক্ষার স্বার্থে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আয়োজিত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে হামলা, নেতাকর্মীদের হত্যা, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আন্দোলনরত বিভিন্ন দলের অসংখ্যা নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, বাড়ী বাড়ী তল্লাশী, হয়রানি ও নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং যুগপৎ ধারায় বৃহত্তর গণ-আন্দোলনের এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি সফল করতে গণফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টি আরামবাগ থেকে শুরু করে মতিঝিল শাপলা চত্বর হয়ে গণফোরাম চত্বর পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

সুব্রত চৌধুরী বলেন, ২৮ অক্টোবর কর্তৃত্ববাদী সরকারী দল আওয়ামী লীগ ন্যক্কারজনক ভাবে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে জনগণের উপর আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও তাদের গুন্ডা বাহিনী দিয়ে পরিকল্পিতভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর উপর দায় চাপিয়ে দিয়েছে। বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে হাজার হাজার নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসাচ্ছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রেখেছে, কোনো জায়গায় তাদের দাপ্তরিক কাজ করার সুযোগ পর্যন্ত দিচ্ছে না। ইতোমধ্যে অন্যায়ভাবে বিএনপি মহাসচিবকে গ্রেপ্তার করেছে এবং অন্যান্য সিনিয়র নেতৃবৃন্দদের আটকের জন্য বাসা বাড়িতে হানা দিচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা দেখেছি পাকিস্তানী সেনাবাহিনী সবসময় তাদের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতো, আজ আমার দেশের অবস্থাও তাই হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকার জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এই যুদ্ধে জয়ী হবে বাঙ্গালী জনতা, ১৮ কোটি মানুষ। অতীতে কোন স্বৈরশাসক ফ্যাসিস্ট সরকার জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বিজয় অর্জন করতে পারেনাই। আওয়ামী লীগ আমাদেরকে নিগৃহীত করতে পারবে, নিপীড়িত করতে পারবে, শৃঙ্খলিত করতে পারবে, বোমা হামলা করতে পারবে, গুলি করবে, টিয়ারগ্যাস মেরে হতাহত করবে। সারা বাংলাদেশে তারা তান্ডব শুরু করেছে মিছিল মিটিংয়ে হামলা হচ্ছে এবং হাজার হাজার নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করছে। অতীতে ৪২ লক্ষ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা ছিল, গত কয়েকদিনে আরো ২০ হাজার মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তবুও আওয়ামী লীগের পায়ের নিচে মাটি নেই। তাই সরকার অত্যাচার নিপীড়ন আরো বাড়াবে আমরা জানি, সরকার সুযোগের অপেক্ষায় ছিল জনগণের উপর কখন ঝাঁপিয়ে পড়বে।

বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারী বলেন, স্বৈরাচারী সরকার জনগণের কণ্ঠরোধ করার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। বিরোধী দলের লোকজনকে হতাহত করে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করছে তবে জনগণ তাদের সকল ভয় ভীতি জয় করে অবরোধ সর্বাত্মকভাবে সমর্থন করছে এবং সফল করছে। ইনশাআল্লাহ জনগণ এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করবে।

গণফোরাম নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট এ.কে.এম. জগলুল হায়দার আফ্রিক বলেন, বন্ধুগণ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ফাইনাল ইনিংস চলছে, এই ইনিংসে আমাদের জয় লাভ করতে হবে যার কোন বিকল্প নাই। পেঁয়াজ, আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা, বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা, এই সরকার জগদ্দল পাথরের মত জনগণের বুকে চেপে আছে। সমগ্র জনগণের সমর্থনে জনতার আন্দোলন সফল হবে এবং শেখ হাসিনা সরকারের পতন হবে ইনশা-আল্লাহ।

বাংলাদেশ পিপলস পার্টির মহাসচিব মোঃ আবদুল কাদের বলেন, ২৮ তারিখের মহাসমাবেশে সরকারের প্রশাসন এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আবারও প্রমাণ করেছে এই দেশে তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করার নীল নকশা কায়েম করেছে। ক্ষমতায় থাকার জন্য তারা জনগণকে হত্যা করতেও পিছপা হবে না। প্রশাসনের মাধ্যমে জনগণের আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। জনগণ এই সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবে। জনগণকে ভয় দেখিয়ে দাবায় রাখা যাবে না।

গণফোরাম তথ্য ও গণমাধ্যম সম্পাদক মুহাম্মদ উল্লাহ মধুর সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পিপলস পার্টির কো-চেয়ারম্যান পারভীন নাসের খান ভাসানী,  গণফোরাম সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব খান ফারুক, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আলীনূর খান বাবুল, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা হাসান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক তাজুল ইসলাম, ছাত্র সম্পাদক মোঃ সানজিদ রহমান শুভ, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এরশাদ জাহান সুমন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কামাল উদ্দিন সুমন, মশিউর রহমান বাবুল, বাংলাদেশ পিপলস পার্টির প্রেসিডিয়াম মেম্বার মোঃ আতিকুর রহমান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জসিম সরদার, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মোঃ লিটন জোয়ার্দার প্রমুখ।